admin
29th Mar 2022 12:31 pm | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক:ইউক্রেন সঙ্কটের কারণে গত কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামে অস্থিরতা দেখা দিলেও মোটামুটি স্থির ছিল ভারতের জ্বালানি তেলের দাম। কিন্তু গত ২২ মার্চ দেশটির রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তেলের দামের সমন্বয় করার পর থেকেই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে দেশটির তেলের দামে।
কয়েক দফা তেলের দাম বৃদ্ধির পর মঙ্গলবার ফের পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়ে ভারতে। সব মিলিয়ে গত এক সপ্তাহে সাত বার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেল দেশটিতে।
দেশটির রাজধানী দিল্লিতে ৮০ পয়সা বেড়ে মঙ্গলবার এক লিটার পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে ১শ রুপি ২১ পয়সায়। দাম বাড়ার আগে গতকাল এই দর ছিল ৯৯ রুপি ৪১ পয়সা। এছাড়া ডিজেল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯১ রুপি ৪৭ পয়সায়। দাম বাড়ার আগে এই দর ছিল ৯০ রুপি ৭৭ পয়সা।
মুম্বাইয়ে পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে প্রতি রুপি ১১৫ রুপি ৪ পয়সায়। আর ডিজেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ৯৯ রুপি ২৫ পয়সায়। ভারতের মহানগরীগুলোর মধ্যে মুম্বাইয়ে তেলের দাম সবচেয়ে বেশি। ভারতে রাজ্যভেদে ভ্যাটের তারতম্যের কারণে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে তেলের দামে পার্থক্য চোখে পড়ে।
পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশের মত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যসহ কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে এই কয়েক মাসে তেলের দাম বাড়ানোর ঝুঁকি নিতে চায়নি ভারতের শাসক বিজেপি সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের এই নীতির মূল্য চোকায় দেশটির রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানিগুলো। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বেশি দামে তেল কিনে কম দামে বেঁচতে হয় তাদের।
এর আগে সর্বশেষ গত ৪ নভেম্বর ভারতে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তেলের দামের সমন্বয় করে দেশটির রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলো। এরপর থেকে ইউক্রেন সঙ্কটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে দফায় দফায় বাড়তে থাকে তেলের দাম। তেলের দাম এক পর্যায়ে প্রতি ব্যারেল ৮২ ডলার থেকে বেড়ে এক পর্যায়ে উঠে যায় ১৩৭ ডলারে।
কিন্তু ভারত সরকারের তেলের দাম না বাড়ানোর নীতির কারণে এ সময়ের মধ্যে ১৯ হাজার কোটি রুপি লোকসান দেয় ভারতের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানিগুলো।
এরপর একে একে নির্বাচন হয় উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গোয়া ও মনিপুরে।
ভোটের পর গত ২২ মার্চ প্রথমবারের মত জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করে ভারতের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলো। এরপরই গত এক সপ্তাহে দফায় দফায় বাড়ল তেলের দাম।
সব মিলিয়ে এই কয়েকদিনে প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৪ রুপি ৮০ পয়সা এবং ডিজেলের দাম বেড়েছে ৪ রুপি ৮৫ পয়সা পর্যন্ত। ভারতের তেলের চাহিদার ৮৫ শতাংশ নির্ভর করে আমদানি করা জ্বালানি তেলের ওপর।
আপাতত রাশিয়ার কাছ থেকে রুপির বিনিময়ে তেল কেনা হবে না বলে সোমবার ভারতের পার্লামেন্টে জানিয়েছেন দেশটির জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি। রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বিভিন্ন দেশকে তাদের স্থানীয় মুদ্রার বিনিময়ে তেল বিক্রির প্রস্তাব দেয় রাশিয়া। ভারতকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে প্রভাব পড়ার শঙ্কা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে তৈরি হওয়া ধোঁয়াশা পরিষ্কার করেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি।
এদিকে মঙ্গলবার কিছুটা বেড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম। ব্রেন্টক্রুড আগের দিনের থেকে ১ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে মঙ্গলবার প্রতি ব্যারেল বিক্রি হচ্ছে ১১৩ দশমিক ৮ ডলারে।
আর ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ৮৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল বিক্রি হচ্ছে ১০৬ দশমিক ৯ ডলারে।