নিউজ ডেস্ক:মৌলভীবাজারে দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি। এ হাওর জুড়ে এখন বোরো ধান কাঁটা ও মাড়াইর কাজ শুরু হয়েছে। ঢলের পানি আসার আগেভাগেই হাওরের পুরো ধান ঘরে উঠানোর আশা কৃষকদের। তবে ছত্রাকজনিত ব্লাস্ট রোগ ও টানা খরার কবলে পড়ে ধানে ব্যাপকভাবে চিটা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এতে মূল উৎপাদনে কোন বিরূপ প্রভাব পড়বে না।হাকালুকি হাওরের বুক জুড়ে ধান আর ধানের সমাহার। যে দিকে চোখ যাবে শুধু আধা-পাকা ধান বাতাসের দোলায় দুলছে। সোনালি আভায় রঙ লাগিয়ে পাকতে থাকায় হাওর পাড়ের কৃষকেরা কাচি হাতে এসব ধান কাঁটতে শুরু করেছেন। তবে অকাল ঢলের ভয়ে কৃষকের উদ্বেগ আতঙ্ক কাঁটছে না। কাজেই কালবিলম্ব না করে ধান কাঁটা ও মাড়াইয়ের পর শুকানো, সেই সাথে তা ঘরে উঠাতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
হাওরপাড়ের একাধিক কৃষক জানিয়েছেন, আরও অন্তত দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় পাওয়া গেলে এ হাওরের পুরো ধান কাটা সম্পন্ন হয়ে যাবে। এদিকে শেষ মুহুর্তে ধান ঘরে উঠাতে গিয়ে কৃষকেরা চরম হতাশায় পড়ছেন। খরা আর একই সাথে ছত্রাকজনিত রোগ ব্লাস্টের সংক্রমণে পুরো হাকালুকি হাওর জুড়ে ব্যাপকভাবে ধানে চিটা দেখা দিয়েছে।
হাকালুকি, বড়লেখা ও জুড়ি উপজেলার বেশকিছু এলাকা সরজমিনে গেলে একাধিক কৃষকের সাথে কথা হয়। কৃষক আব্দুল মন্নাফ ক্ষুদ্ধ হয়ে জানালেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকাতে এ বছর হাওরে বোরোর ভালো ফলন হয়েছে। আশা ছিলো ধানের বাম্পার ফলনের। কিন্তু ধানগাছে তোড় আসার আগ মুহূর্তেই টানা খরার কবলে পড়ে। সেই সাথে ধান গাছ মরে সাদা হয়ে যায়। এখন ধান কাটতে এসে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ ধানেই চিটা। তিনি জানালেন, হাকালুকি হাওরের প্রায় সবকটি জমির একই অবস্থা।
জুড়ি, বড়লেখা ও কুলাউড়া উপজেলার হাওর পাড়ে সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে একই অবস্থা। এতে কৃষকেরা তাদের কাঙ্খিত ফলন না পাওয়াতে হতাশ।
এদিকে জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী খরা আর ছত্রাকজনিত ব্লাস্ট রোগের উপস্থিতির কথা স্বীকার করে বলেছেন, যে সব কৃষক সঠিক সময়ে জমিতে ঔষধ প্রয়োগ এবং সেচ দিতে পারছে, তাদের জমিতে কোন সমস্যা হবে না।
জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বোরো ২৮ জাতের ধানে এবারে ব্লাস্ট রোগের উপস্থিতি দেখা গেছে বেশি। তারা বলছেন, আগামিতে কৃষকরা যাতে এ জাতের ধান চাষাবাদ না করে। এর জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
জেলা কৃষি অধিদফতরের দেওয়া তথ্যমতে, দেশের বৃহত্তম এ হাকালুকি হাওরে ১৩ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হলেও উৎপাদন ৫৩ হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন চাল।
Array