নিউজ ডেস্ক:দেশে লবণ আমদানি বন্ধ ছিল। কিন্তু ঘাটতি মেটাতে বিগত ৪ বছর পর পুনরায় লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। দেশে এবার যে লবণ উৎপাদন হয়েছে তাতে ৫ লাখ টনেরও বেশি ঘাটতি রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে লবণের বাজার যাতে অস্থির না হয়ে ওঠে সেজন্য ভারত থেকে লবণ আমদানি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মূলত গুণগতমান এবং মূল্যের সুবিধার কারণেই প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে লবণ আমদানি শুরু করা হয়েছে। গত জুলাই মাসেই ৩০ হাজার টন দেশে পৌঁছেছে। আর চলতি সপ্তাহে আরো ৮০ হাজার টন চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছবে। তাছাড়া চলতি মাসের মধ্যেই দেড় লাখ টন লবণ দেশে পৌঁছার কথা রয়েছে। সরকারি এবং লবণ মিল মালিক সমিতি সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সদ্যসমাপ্ত মৌসুমে দেশে ২৩ লাখ ৩৫ হাজার টন লবণ উৎপাদনের টার্গেট থাকলেও উৎপাদিত হয়েছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টন লবণ। অর্থাৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৫ লাখ ৫ হাজার টন কম লবণ উৎপাদিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল থাকতেই সরকার নির্দিষ্ট ডিলারদের মাধ্যমে লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্র জানায়, গত ২১ মে দেশে লবণ উৎপাদন মৌসুম শেষ হয়েছে। কিছুটা বৈরী পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও এবার দেশে লবণ উৎপাদন টার্গেটের কাছাকাছি পৌঁছেছে। মাত্র ৫ লাখ ৫ হাজার টন ঘাটতি রয়েছে। এ অবস্থায় বাজার যাতে অস্থিতিশীল না হয় ওই লক্ষ্যে লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্প কারখানায় ব্যবহার্য সোডিয়াম সালফেটের ওপর আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করার ফলে অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিত হয়েছে। তারপরও একটি চক্র মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে খাবার লবণ আমদানিতে তৎপর। তাছাড়া মিয়ানমার থেকে একটি দুষ্টচক্র চোরাপথে লবণ নিয়ে আসার তথ্যও রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, সরকার গত জুন মাসের শেষ দিকে লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিসিক নিবন্ধিত ২৩০টি মিল মালিকদের মাধ্যমে দেড় লাখ টন লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত দেয়ার পর তা ক্রমান্বয়ে দেশে আসছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের অস্থিতিশীল বাজার পরিস্থিতির কারণে সরকারী পর্যায়ে চাহিদার আরো সাড়ে ৩ লাখ টন লবণ আমদানির চিন্তা-ভাবনা চলছে। দেশে লবণ উৎপাদনে ৮টি জোন রয়েছে। ওসব জোনের মিলাররা এ, বি, সি ও ডি গ্রুপে বিভক্ত।
এদিকে লবণ মিল মালিক সমিতির মতে, ক্রুড এবং ফিনিশড প্রোডাক্ট পর্যায়ের লবণের বাজার মূল্য সম্পূর্ণ স্থিতিশীল। বিভিন্ন সময়ে প্রতি মণে ২০ থেকে ৩০ টাকা কখনো বাড়ছে, আবার কখনো কমছে। বর্তমানে মিল গেটে ৭৫ কেজি এক বস্তা লবণ ১ হাজার ৫০ থেকে ১১শ’ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ক্রুড পর্যায়ের লবণ বিক্রি হচ্ছে ৯৬০ থেকে ১০৫০ টাকায়। পাশর্^বর্তী দেশ ভারতের গুজরাট থেকে কালনা বন্দর হয়ে আমদানির ওসব লবণ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছাচ্ছে।