আওয়ামী লীগ নিয়ে অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্য কি রাজনৈতিক?
ডেক্স রিপোর্ট : আজকের তথ্যচিএ :
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার অভিযোগ এনেছেন। যদিও তিনি এর আগে বিভিন্ন সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিচারের কথা বলেছেন। কিন্তু এখন তিনি পতিত দলটিকে নিয়েই রাজনৈতিকভাবে আক্রমণাত্মক ভাষায় বক্তব্য দিলেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন।
অন্যদিকে, দেশটির রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া আওয়ামী লীগের ফেরত আসা বেশ কঠিন; তাদের জন্য বড় বাধা নৈতিকতার প্রশ্ন।
সরকার প্রধান অধ্যাপক ইউনূস এমন এক প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে বক্তব্য দিলেন, যখন আইনশৃঙ্খলাসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বা কর্তৃত্বের প্রশ্নে নানা আলোচনা চলছে। অন্যদিকে, নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বর্তমানে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ, বিভেদ প্রকাশ্যে এসেছে।
সম্প্রতি সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও বিভক্তির রাজনীতি, আইনশৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কঠোর ভাষায় বক্তব্য দিয়ে সব পক্ষকে সতর্ক করেছেন। সেই বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ঐক্য না থাকলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে।
এমন পটভূমিতে বিবিসি বাংলা গত তেশরা মার্চ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। সেই সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধানের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল প্রধান উপদেষ্টাকে।
সেনাপ্রধানের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নে তিনি প্রথমে মন্তব্য করতে চাননি। তবে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো শঙ্কা আছে কি না- এই প্রশ্ন করা হলে এর জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, “এটাতো সবসময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্ট করছে এটাকে (দেশটাকে) আনসেটেল (অস্থিতিশীল) করার জন্য। এটাতো সবসময় থ্রেট (হুমকি) আছেই। প্রতিক্ষণেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে।”
ওই সাক্ষাৎকারে এই হুমকির জন্য তিনি আওয়ামী লীগকেই দায়ী করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, অধ্যাপক ইউনূসের এ ধরনের বক্তব্যে তার আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট হলো। বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নেতাদেরও অনেকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ঘিরে অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্যকে একটি রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে দেখছেন।
কারণ প্রধান উপদেষ্টা এতদিন দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে কোনো বক্তব্য দেননি। আর আগে বিভিন্ন সময় তার বক্তব্য সীমাবদ্ধ ছিল শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের বিষয়ে।
যদিও সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বিভিন্ন সময় ক্ষমতাচ্যুত দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিয়ে রাজনৈতিকভাবে নানা অভিযোগ করেছেন বা বক্তব্য দিয়েছেন। বিশেষ করে শেখ হাসিনার শাসনের পতনের আন্দোলনের ছাত্র নেতৃত্বের প্রতিনিধি যারা সরকারে আছেন, তারা শুরু থেকে দলটির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে আসছেন। ছাত্র নেতৃত্বের দিক থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার চাপও রয়েছে।
তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা!